June 23, 2022

Admin

করপোরেট কর কমানোর শর্ত শিথিলের দাবি এফআইসিসিআই’র


অর্থমন্ত্রীর ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর কমানোর শর্ত শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেইন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যবসা এবং বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানানো হয়। এতে এফআইসিসিআই সভাপতি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফআইসিসিআই অ্যাডভাইজার ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ-এর এমডি রূপালী চৌধুরী, বৃটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এমডি শেহজাদ মুনিম, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লি. এর এমডি জাভেদ আখতার। এফআইসিসিআই জানায়, শর্তসাপেক্ষে ২.৫% করপোরেট কর হ্রাসের ক্ষেত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সমস্ত রশিদ অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। এফআইসিসিআই-এর প্রস্তাব অনুসারে, এই বিধানটি সংশোধন করা উচিত। পাশাপাশি, এমন একটি হ্রাসকৃত হারের সুবিধা পেতে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অন্তত ৫০% অর্থ সংগ্রহের অনুমতি দেয়া উচিত। পরের বছর থেকে এই হার ধীরে ধীরে ১০% পর্যন্ত বাড়িয়ে তোলা যায়। একইসঙ্গে, ১২ লাখ টাকার বেশি সকল বিনিয়োগ ও খরচ অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

এফআইসিসিআই প্রস্তাব হচ্ছে, এই অসঙ্গতি দূর করতে আইটিও, ১৯৮৪-এর ৩০তম ধারা সংশোধন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে করপোরেট খরচের অন্তত ১০% নন-ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রদান করার অনুমতি দেয়া উচিত। হ্রাসকৃত করের হারের সুযোগ পেতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  এফআইসিসিআই মনে করে, প্রস্তাবিত বাজেটে এমন একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে একটি কোম্পানিকে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ)-এর অবদানের ওপর কর প্রদান করতে হবে। এটি কোম্পানিটির আয়করের বোঝা ও কার্যকর করের হার বাড়িয়ে তুলবে। আমরা বুঝি যে, ডব্লিউপিপিএফ-কে অগ্রহণযোগ্য ব্যয় হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে, এটি লভ্যাংশের মতো কর-পরবর্তী লাভ থেকে লাভের একটি ডিভিডেন্ড। যদিও বাস্তবতা হলো, এটি কর্মীদের সুবিধার জন্য একটি সংবিধিবদ্ধ পারিশ্রমিক। এই ধরনের করারোপ তার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ২০০৬ সালের শ্রমিক আইন দ্বারা গঠিত বিধানের পরিপন্থি। এফআইসিসিআই-এর প্রস্তাব অনুসারে, এই বিধানটিকে একটি অগ্রহণযোগ্য ব্যয় হিসেবে বিবেচনা করে একে আইটিও, ১৯৮৪-এর ৩০তম ধারার পরিবর্তে ২৯তম ধারায় অনুমোদিত ব্যয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। বাজেট প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এফআইসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাজেটের কিছু বিধানের ফলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বৃদ্ধির গতি ধীর হয়ে যেতে পারে। এটি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকে আরও নিরুৎসাহিত করবে।  শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, কোম্পানির নিট লাভ থেকে ডব্লিউপিপিএফ প্রদেয়, যাকে আইনে কর-পূর্ব মুনাফা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একজন ব্যক্তিকে ৫০,০০০ টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের জন্য কর দিতে হবে। অপরপক্ষে, নিট লাভে ৫% এর ১০% সরকারি কল্যাণ তহবিলে জমা দিতে হবে। এবং তাই এই অবদানের ওপর করারোপ করা হলে সরকারকে অর্থপ্রদানের ওপর করারোপ করা হবে। ডব্লিউপিপিএফকে একটি ব্যয় হিসেবে অনুমোদন না করা দ্বিগুণ করের সমান, কারণ কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা উভয়কেই এর ওপর কর দিতে হবে। এই করারোপ বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করার ক্ষেত্রে আরও চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে।

No Commment found